ভেবেছিলাম একটা প্রেমের কবিতা লিখব। বেশ আটপৌরে ।
লম্বা এক ঝুলবারান্দা আর তার ঠিক গা ঘেঁষে একটা ছিপছিপে তেঁতুল গাছ। বারান্দায় উড়তে দেখা যাবে এক লাল টুকটুকে সোনালি পাড়ের শাড়ি। কোনো এক বসন্তের সকালে সেই বাড়ীর পরম আদরের মেয়ে বারান্দায় আসবে আনমনে গানের কলি গাইতে গাইতে। ওই বাড়ীরই একতলায় সেই অষ্টাদশী মেয়ের কাকার ঘর থেকে ভেসে আসবে আকাশবাণী কলকাতার প্রাত্যহিকী। মেয়েটি হঠাৎ ই দেখবে ঢোলা পাজামা পান্জাবী পরিহিত এক যুবক চলেছে দ্রুত সাইকেল চালিয়ে রাস্তা দিয়ে। সকাল আট্টা আটের ট্রেন তার মানে এখনো যায়নি,ভাববে মেয়েটি। আর নিজের মনেই বলবে ‘কবে যে একটু কায়দার পোষাক পরতে শিখবে বকুরাম’। বলেই সে মুখ ঘুরিয়ে বারান্দায় ঝোলানো দেওয়াল ঘড়ির দিকে তাকাবে আর বলবে ‘দুগ্গা দুগ্গা’।
ছেলেটিও একটিবারের জন্যে ওপরের দিকে তাকিয়ে চাপ বাড়াবে সাইকেলের প্যাডেলে।
‘আজ বিকেলে ফেরার সময় চৌরুঙ্গীর এম বিশ্বাস এ্যান্ড সিম্ফোনী থেকে এলপিটা কিনতে হবে। সেই এলপিটা যাতে আছে বড়ে গোলাম আলীর গান। ’ ছেলেটা ভাবতে ভাবতে পৌঁছোবে স্টেশনে।
‘ইস্ সেদিন রুম্পাদের বাড়ীতে কি সুন্দর গেয়েছিল বকুরাম। ’মেয়েটা ছেলেটির চলে যাওয়া অবয়ব দেখতে দেখতে ভাববে।
ছোট্ট শহরটায় বসন্তের সকাল তার শান্ত স্নিগ্ধ আলোর পশরা নিয়ে বসবে।
ভেবেছিলাম এমনই এক প্রেমের কবিতা লিখব।
No comments:
Post a Comment